ইসরায়েলি সেনার গুলিতে গাজায় খ্রিষ্টধর্মাবলম্বী মা-মেয়ে নিহত
ফিলিস্তিনের গাজা নগরীতে একমাত্র ক্যাথলিক গির্জা প্রাঙ্গণে গতকাল শনিবার ইসরায়েলি সেনার গুলিতে দুই খ্রিষ্টান নারী নিহত হয়েছেন। সম্পর্কে তাঁরা মা-মেয়ে। জেরুজালেমের লাতিন প্যাট্রিয়ার্কের কার্যালয় থেকে দেওয়া বিবৃতিতে খবরটি নিশ্চিত করা হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আজ দুপুরের দিকে গাজায় ক্যাথলিক সম্প্রদায়ের হলি ফ্যামিলি প্যারিশের ভেতর ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর এক সেনা দুই খ্রিষ্টান নারীকে হত্যা করেছেন।’ গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েল-ফিলিস্তিন যুদ্ধ শুরুর পর ওই গির্জা প্রাঙ্গণে খ্রিষ্টান পরিবারগুলো আশ্রয় নিয়েছিল।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, সিস্টার’স কনভেন্টের দিকে যাওয়ার সময় নাহিদা ও তাঁর মেয়ে সামারকে গুলি করে হত্যা করা হয়। প্রথমে একজন গুলিবিদ্ধ হন, অপরজন তাঁকে নিরাপদে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে তাঁকেও গুলি করে হত্যা করা হয়।
অন্যদের বাঁচানোর চেষ্টা করার সময় গুলিতে আরও সাতজন আহত হয়েছেন বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
জেরুজালেমের লাতিন প্যাট্রিয়ার্ক পিয়েরবাত্তিস্তা পিজ্জাবাল্লার বরাত দিয়ে ভ্যাটিকান প্রেস এজেন্সি জানিয়েছে, এক বয়স্ক নারী এবং তাঁর মেয়ে নিহত হয়েছেন।
এএফপির পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বলেছে, তারা ঘটনাটি খতিয়ে দেখছে।
যে গির্জা প্রাঙ্গণে ঘটনাটি ঘটেছে, সেটি গাজা উপত্যকার একমাত্র ক্যাথলিক গির্জা।
প্যাট্রিয়ার্কের কার্যালয় থেকে বলা হয়েছে, গুলি শুরু করার আগে কোনো ধরনের সতর্কসংকেত দেওয়া হয়নি।
বিবৃতিতে বলা হয়, একটি সন্ন্যাসী মঠেও ইসরায়েলি ট্যাংক থেকে গোলা হামলা হয়েছে। হামলায় সেখানকার জেনারেটর ও জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেছে। একটি ভবন বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। সেখানে ৫৪ জন শারীরিক অক্ষম ব্যক্তি থাকতেন। তাঁরা এখন বাস্তুচ্যুত হয়ে পড়েছেন। তাঁদের কারও কারও শ্বাসযন্ত্রের প্রয়োজন হলেও শ্বাসযন্ত্র নেই।
ভ্যাটিকান প্রেস এজেন্সির তথ্যানুসারে, এসব হামলায় তিনজন আহত হয়েছেন।
ইতালির শীর্ষ কূটনীতিক আন্তোনিও তাজানি খ্রিষ্টানদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য ইসরায়েল সরকার ও সেনাবাহিনীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে অতর্কিত হামলায় চালায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। এতে ১ হাজার ১৪০ জন ইসরায়েলি নিহত হন। ওই দিন থেকে ইসরায়েলের নির্বিচার হামলায় গাজায় কমপক্ষে ১৮ হাজার ৮০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। তাঁদের বেশির ভাগই নারী ও শিশু।